কক্সবাজার ব্যুরো
কক্সবাজার শহরের কলাতলী থেকে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে দুজন মিলে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে অপহরণ করে চালককে। লিংকরোড এলাকায় পৌঁছালে চালক জাহেদ হোসাইনকে (২৫) অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয় গহিন পাহাড়ে। সেখানে তার হাত-পা বেঁধে স্বজনদের ফোনে একাধিকবার কল করে চাওয়া হয় পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) রাত ৮টার দিকে অপহরণ করা হয় জাহেদ হোসাইনকে। এর পাঁচ দিনের মাথায় মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) ভোরে তাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় র্যাব-১৫ এর একটি দল।
জানা গেছে, গ্রামবাসীর সহায়তায় রামুর রাজারকুলের উমখালীর গহিন পাহাড়ি এলাকায় ব্লক রেইড অভিযান চালিয়ে র্যাব
তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন শামীম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অপহরণের শিকার অটোরিকশা চালক জাহেদ হোসাইন উখিয়া উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের গায়ালা মারা এলাকার ছিদ্দিক আহমদের ছেলে। অপহৃত চালকের বড় ভাই সৈয়দ হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে এক নারী ও এক পুরুষ যাত্রী সেজে কলাতলী থেকে রামুর কলঘর বাজার যাওয়ার জন্য জাহেদের অটোরিকশা ভাড়া করে।
তারা লিংকরোড এলাকায় পৌঁছানোর পর জাহেদকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করে। পরে জাহেদের ফোন থেকেই একাধিকবার কল করে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। সবশেষ অপহরণকারীরা জানান, ২৫ মার্চ রাতের মধ্যে টাকা না দিলে জাহেদকে কেটে টুকরো টুকরো করে লাশ পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এ পরিস্থিতিতে তারা (স্বজনরা) র্যাবের শরণাপন্ন হন।
র্যাব কর্মকর্তা শামীম জানান, অপহরণকারীদের অবস্থানস্থল চিহ্নিত করে কয়েকশ গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে অপহরণকারীদের আস্তানা ঘিরে ফেলা হয়। অভিযানের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে অপহৃত জাহেদকে রেখেই সটকে পড়েন অপহরণকারী চক্রের বেশিরভাগ সদস্য। এসময় দুর্গম পাহাড়ি ঢাল থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় জাহেদকে উদ্ধারের পাশাপাশি অপহরণ চক্রের এক সদস্যকে হাতেনাতে আটক করা হয়।গ্রেফতার শাহাব উদ্দিন ওরফে ইকবাল (২৮) কক্সবাজারের রামু থানার উমখালী এলাকার বাসিন্দা মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে।
অপহৃত জাহেদের মা জমিলা খাতুন বলেন, ‘আমার বুকের ধনকে ফিরে পাবো সেই আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। উদ্ধার করে দেওয়ায় র্যাবের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
সাম্প্রতিক সময়ে কক্সবাজার এলাকায় গুম অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। তবে অভিযানের নেতৃত্বে থাকা কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, কক্সবাজার থেকে অপহরণ-মুক্তিপণের এ চক্রকে নির্মূলে র্যাবের তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।