নিজস্ব প্রতিবেদক:
পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুর হোসেনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে অনাস্থা দিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের ১২ জন ইউপি সদস্যগণ। বুধবার (১৭ এপ্রিল) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে তারা অনাস্থাপত্র জমা দেন এবং তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। লিখিত অভিযোগ সূত্রে বলা হয়, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর হতে বিভিন্ন প্রকল্প ও অর্থ আত্মসাত করে আসছে তিনি। একাধিকবার আমাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাদের থেকে বিভিন্ন সময়ে অলিখিত কাগজে স্বাক্ষর করে নিতেন। তার মাধ্যমে বিভিন্ন সময় জাল জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র ব্যবহার করে সরকারী বরাদ্ধকৃত প্রকল্পের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য কুতুব উদ্দিন, আব্দুর রহিম ও হেলাল উদ্দিন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা দেওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে বিভিন্ন সময়ে সরকারীভাবে বরাদ্ধকৃত আনুমানিক ২৫০ মেঃ টন চাউল ও গম বরাদ্ধের অনুকূলে কোন প্রকার প্রকল্পের কাজ না করে চেয়ারম্যান সম্পূর্ণভাবে আত্মত্মসাৎ করেছেন।
চেয়ারম্যানর অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে আমরা প্রতিবাদ করলেও কোনরূপ কর্ণপাত করেনা। তিনি চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর হইতে ইউনিয়ন পরিষদ হইতে ইউপি সদস্য হিসাবে আমরা মেম্বারের বিভিন্ন প্রকার ভাতা ও বোনাসের টাকা প্রদান না করে উক্ত ভাতা ও বোনাসের যাবতীয় টাকা চেয়ারম্যান নিজে আত্মসাৎ করেছেন।তাছাড়াও চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদের আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী যথাযথভাবে মাসিক সভা ও অন্যান্য সভা আহবান না করে আমাদের নিকট থেকে প্রভাব বিস্তারের করে অলিখিত কাগজে ও সভার কার্যবিবরণী বইয়ে স্বাক্ষর নিয়ে নেন।
অভিযোগ সুত্রে জানাযায়, ইউপি চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর হতে বাংলাদেশে আগত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রিত নেওয়া মায়ানমারের নাগরিকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে অনরক রোহিঙ্গা নাগরিকদের জাতীয়তা সনদপত্র দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অভিযোগে আরও জানান, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে মুজিব শতবর্ষের উপহারস্বরূপ গৃহহীন মানুষের জন্য সরকারীভাবে বরাদ্ধকৃত প্রতি ঘরের বিপরীতে বরাদ্ধপ্রাপ্ত ব্যক্তির থেকে ৩০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা করে আদায় করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অনাস্থা প্রস্তাব প্রসঙ্গে ফাঁসিয়াখালি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুর হোসেন বলেন, অভিযোগের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তাদের সঙ্গে কোনো ঝামেলা হয়নি। কেন আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করছে তাও জানি না। এ বিষয় জানতে চাইলে লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মেম্বারদের লিখিত অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।